জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলে বিজেপি কর্মীদের বিক্ষোভ ঘিরে রণক্ষেত্র

21st January 2021 7:42 pm বর্ধমান
জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলে বিজেপি কর্মীদের বিক্ষোভ ঘিরে রণক্ষেত্র


নিজস্ব সংবাদদাতা ( বর্ধমান ) : পূর্ব বর্ধমান জেলা বিজেপির সভাপতি সন্দীপ নন্দীর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলে দলের কর্মীরাই বিক্ষোভ দেখালেন বিজেপির জেলা কার্যালয়ের সামনে । বিক্ষোভ পরবর্তী সময়ে হিংসাত্মক চেহারা নেয় । নিজেদের মধ‍্যেই ব‍্যাপক ইঁটবৃষ্টি , লাঠি নিয়ে দলীয় অফিসে ভাঙচুর , সামনে দাঁড় করানো একাধিক বাইকে ভাঙচুর এমনকি রাস্তার উপরে দাঁড় করানো একাধিক গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় । প্রকাশ‍্যে রাস্তার উপরে দাউদাউ করে জ্বলতে থাকে গাড়ি । ঘটনাকে ঘিরে মুহুর্তে র মধ‍্যে রণক্ষেত্রে র চেহারা নেয় পূর্ব বর্ধমান জেলা বিজেপির কার্যালয় চত্ত্বর । ইট ছুড়ে দলীয় অফিসের কাঁচ ভেঙে দেওয়া হয় । এমনকি পার্টি অফিসের ছাদ থেকেও বিজেপি কর্মীদের কেউ কেউ নীচে থাকা কর্মীদের লক্ষ‍্য করে ইট ছোঁড়েন । আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন বলে বিক্ষোভকারীরাই জানিয়েছেন । বর্ধমান সদর থানার আইসি পিন্টু সাহার নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী আসে ঘটনাস্থলে । জ্বলন্ত অবস্থায় থাকা গাড়িগুলিকেও নেভানোর চেষ্টা করা হয় । ভাতার , আউশগ্ৰাম , গলসী প্রভৃতি এলাকা থেকে বিজেপির কর্মীরাই এসেছিলেন ওই গাড়িগুলিতে করে । ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কয়েকজনকে আটক ও করেছে পুলিশ । রীতিমতো ফেসবুকে ঘোষনা করে দিন কয়েক আগে থেকেই এই কর্মসূচী নিচ্ছেন একাংশ বিজেপি কর্মী বলে প্রচার চলছিলো । তাদের অভিযোগ পূর্ব বর্ধমান জেলা বিজেপির সভাপতি দুর্নীতিতে জড়িত । তিনি টাকার বিনিময়ে তৃণমূল থেকে আসা লোকজনদের পদ দিচ্ছেন । পুরাতন কর্মীদের ক্রমশ দূরে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে । তৃণমূলের লোকজন প্রাধান‍্য পাচ্ছে সব জায়গায় ‌ । এমনকি দলীয় কার্যালয়ে অসামাজিক কাজ ও হয় বলে অভিযোগ বিজেপি কর্মীদের ই । সংঘ পরিবারের বেশ কিছু সদস‍্য তারা মানসিকভাবে কঠোর আন্দোলনের প্রস্তুতি নিয়েই এখানে হাজির হন ‌ । ডিসেম্বর মাসে জেলা সভাপতির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও সেই পদে সন্দীপ নন্দী রয়েছে । অবিলম্বে তাকে অপসারণ করতে হবে বলে দাবী । পুরাতন বিজেপি কর্মীদের দলে জায়গা দিতে হবে , দায়িত্ব সহ । সে বিষয়েই উচ্চ নেতৃত্বে র সাথে আলোচনা করতে আসেন বিভিন্ন জায়গার আদি বিজেপি কর্মীরা । অভিযোগ , তাদের মধ‍্যে তিনজনকে কার্যালয়ের ভিতরে আটকে রেখে মারধোর ও হুমকি দেওয়া হয় । কেন উচ্চ নেতৃত্বের কাছে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে তা নিয়েই শুরু হয় চাপান উতোর । এরপরেই শুরু হয় উত্তেজনাকে পরিস্থিতি । আয়ত্ত্বের বাইরে চলে যায় পরিস্থিতি । এরপরেই বিশাল পুলিশ বাহিনী এসে ঘিরে ফেলে গোটা এলাকা । বিজেপি নেতা প্রবাল রায় জানান , এই ঘটনার পিছনে পিকে ও তৃণমূলের মদত আছে । প্রকৃত বিজেপি কর্মীরা কখন ও তাদের কাছে মন্দির সম কার্যালয় ভাঙচুর করতে পারে না । যারা ভাঙচুর করেছে তারা কারা চিহ্নিত করে  ব‍্যবস্থা নেওয়া হবে । ঘটনার পরেই সন্ধ‍্যায় কার্যালয়ে আসেন রাজ‍্য বিজেপির নেতা রাজু বন্দ‍্যোপাধ‍্যায় । তিনিও জানিয়েছেন কারা ঘটনা ঘটিয়েছে তা তদন্ত করে দেখা হবে । তৃণমূল পায়ের তলায় মাটি হারিয়ে এইসব কাজ করছে বলে অভিযোগ তার । বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ জানিয়েছেন , ঘটনা নিন্দাজনক । যারা এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের চিহ্নিত করে বহিষ্কার করা হবে । যদিও এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব । রাজ‍্য মুখপাত্র দেবু টুডু বলেন , এরা গুজরাটের সংস্কৃতি আমদানি করতে চাইছে । নিজেরা নিজেরাই মারপিট করে অশান্তি তৈরী করছে । এদের মানুষ ক্ষমা করবে না । বর্ধমানের মানুষ আসন্ন নির্বাচনে জবাব দেবে । বর্ধমান উত্তর বিধানসভার বিধায়ক নিশীথ মালিক এই ঘটনার নিন্দা করে জানিয়েছেন , অরাজকতা তৈরি করছে বিজেপি । নিজেরাই মারপিট করছে । উন্নয়নের কিছু জানে না এরা । স্বাস্থ‍্য সাথীর মত প্রকল্প নিয়ে অপপ্রচার করে । সর্বস্তরের মানুষকে ঐক‍্যবদ্ধ হতে হবে বলে আহ্বান করেন বিধায়ক । 





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।